সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

জলবায়ু কূটনীতিতে বাংলাদেশ, কপ-২৬ পরবর্তী প্রসঙ্গে একটি মূল্যায়ন

গত বছর গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ বিশেষ কারণেই অন্য যেকোনো বারের কপ সম্মেলন থেকে আলাদা। জলবায়ু পরিবর্তনে এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মহল প্রতিশ্রুতির চেয়ে সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। তারা বুঝাতে চেয়েছেন তর্কবিতর্ক অথবা শুধুমাত্র ডায়লগ কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত না হলে এই সম্মেলন ব্যর্থতায় পরিণত হবে।

পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুর প্রতিনিধিদের কাছ থেকেও আমরা শুনেছি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ইতোমধ্যেই কিভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে এবং কিভাবে তাদের জীবন ও জীবিকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে যে প্রশ্নটি সর্ব মহলে উত্থাপিত হচ্ছে, বিস্ময়ের সঙ্গে যে প্রশ্নটি আমাদের বাকরুদ্ধ করেছে তা হল, কপ সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের প্রতিশ্রুতির পরিবর্তে সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর করার ঐক্যমত, বিশ্বজুড়ে আলোচিত জলবায়ু পরিবর্তন ও দক্ষিণ মেরুর এমন পরিস্থিতি দেখেও ‘আমরা তাহলে কী করছি?’

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের উপর আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আইপিসিসি এর সর্বশেষ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কপ-২৬ এ অভিযোজন এবং এর অর্থায়নের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট একটি কমিটি প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের বিষয়ে রিপোর্ট করবে এবং ২০২৪ সালে আবারও আলোচনা হবে।

কপ-২৬ জলবায়ুর দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ নিম্ন-আয়ের দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নের সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতির সাক্ষী হয়ে থাকবে। যার পরিমাণ প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেইসঙ্গে আরও ২৩২ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতিও থাকছে। আর এই তহবিল গঠিত হবে সব উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের নিজস্ব অর্থায়নে।

বাংলাদেশের জন্য গত বছরের কপ-২৬ সম্মেলন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের অনড় অবস্থান ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বলেছে যে, যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করছে সেসব রাষ্ট্রে জাতীয়ভাবে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেই সম্মেলনে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি কমানোর পক্ষে বার্ষিক ১.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুত তহবিল গঠনের জন্য এবং এর অর্ধেক অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বরাদ্দ করার বিষয়ে উন্নত দেশগুলোকে আহ্বান জানায়। সিভিএফ এর চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ ক্রমাগত উন্নত দেশগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ প্রযুক্তি প্রদানের মাধ্যমে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াতে অনুরোধ করছে।

এ ছাড়াও ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, লবণাক্ততা, নদীভাঙন, বন্যা এবং খরার কারণে বাস্তুচ্যুত অভিবাসীদের জন্য বৈশ্বিক দায়িত্ব ভাগাভাগি করার বিষয়েও বাংলাদেশ গ্লোবাল ফোরামে গুরুতারোপ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্যতম সক্রিয় দেশ হয়ে উঠেছে।

বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ০.৩৫ শতাংশেরও কম অংশ বাংলাদেশের, তবুও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ।

কপ-২৬ বাংলাদেশের এবং এখানকার শিশুদের ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুরক্ষিত উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ার সেরা সুযোগ। হয়ত সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই চূড়ান্ত সুযোগ। যেহেতু পুরো পৃথিবী কোভিড-১৯ মহামারি থেকে ভালোভাবে আবারো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে তাই এবার আমাদের সবাইকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার এই ঐতিহাসিক সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে।

এই সমস্যা থেকে উত্তরণ করতে চাইলে বা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চাইলে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। শুধুমাত্র ক্ষতি সাধন করে এমন বিষয় নয়, যা এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে পারে তা নিয়েও ভাবতে হবে।

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান’ বা বিসিসিএসএপি এর উন্নয়নের মাধ্যমে জলবায়ু মোকাবিলার বিষয়টি জোরদার করেছে। সিসিএসএপি বিশেষভাবে ছয়টি কৌশলগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে কাজ করছে। সেগুলো হলো— খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাপক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো, গবেষণা ও জ্ঞান ব্যবস্থাপনা, প্রশমন এবং কম কার্বন নিঃসরণ। এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ৪৪টি প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।

বাংলাদেশ এমন একটি মধ্যপন্থী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে, যার মূল বিষয় হলো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। সে হিসেবে সবার বিশেষ করে জাতিসংঘে ব্যাপক নির্ভর করে। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায় কূটনৈতিক ভাষার সর্বোত্তম ব্যবহার করে বাংলাদেশ লক্ষণীয় প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে। বাংলাদেশের উচিত ‘সমান পরামর্শ, পারস্পরিক সুবিধা এবং অভিন্ন উন্নয়নের ভিত্তিতে এই বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করার চেষ্টা করা। বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

২০১৮ এর ১৪ মে মন্ত্রিসভা পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রালয়’ হিসেবে ঘোষণা করে। এটি ছিল লক্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায় কূটনৈতিক অধিভুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টা লক্ষণীয়।

উন্নত দেশগুলোকে ওয়াদাকৃত এক বিলিয়ন ডলারের তহবিল স্থাপনে রাজি করার জন্য বাংলাদেশের উচিত অবিরামভাবে অ্যাডভোকেসি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। সিভিএ এর চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশকে অতীতের মতো একই বার্তা উন্নত দেশগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে হবে, যে সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে পরিচ্ছন্ন ও সবুজায়ন প্রযুক্তি ভাগাভাগি করে নিতে হবে। সারা পৃথিবী জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত অভিবাসীদের কল্যাণে বাংলাদেশকে অবশ্যই সমর্থন দিয়েই যেতে হবে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিজিটিং স্কলার, অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ

আরএ/

Header Ad

অবৈধ দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেল বন্ধের কার্যক্রম শুরু

অবৈধ দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেল বন্ধের কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। ছবি: সংগৃহীত

অবৈধভাবে দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেল প্রদর্শন ও লাইসেন্সবিহীন বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধে কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

সোমবার (৬ মে) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

গত ২ এপ্রিল তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সংক্রান্ত দশটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো-

১) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইন, ২০০৬ এর অধীনে অনুমোদিত সেবা প্রদানকারীগণই সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দেশি ও বিদেশি চ্যানেলগুলো গ্রাহকের কাছে বিতরণ করতে পারবে;

২) ক্লিনফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেল কিংবা অননুমোদিত কোনো চ্যানেল ডাউনলিংক, সম্প্রচার, সঞ্চালন বা বিতরণ করা যাবে না;
৩) সেট-টপ বক্স অবৈধভাবে আমদানি ও বাজারজাত করা যাবে না;

৪) টিভি চ্যানেল স্ট্রিমিং এর অ্যাপসগুলো ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে প্রচারণা করা কিংবা এ ধরনের অ্যাপস সেট-টপ-বক্স এ ইন্সটল করে বিক্রি করা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। এর বিরুদ্ধে বিটিআরসি কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;

৫) দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে, সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির স্বার্থে, বিদেশে অর্থ পাচার রোধে এবং দেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে যেকোনো অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় প্রচলিত আইন ও বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে;

৬) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ৩ (১) উল্লেখ আছে, “কোনো ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী নির্ধারিত আবেদনপত্রের ভিত্তিতে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত চ্যানেল ব্যতীত অন্য কোনো চ্যানেল বাংলাদেশে ডাউনলিংক, বিপণন, সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিতে পারিবে না”। এছাড়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় হতে বিদেশি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান ক্লিনফিড সম্প্রচারের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অতএব, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্লিনফিড ব্যতীত বিদেশি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার বা সঞ্চালন করতে পারবে না;

৭) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ৩ (২) এ উল্লেখ আছে, “কোনো ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী সরকার অনুমোদিত চ্যানেল ব্যতীত নিজস্ব কোনো অনুষ্ঠান যথা: ভিডিও, ভিসিডি, ডিভিডির মাধ্যমে অথবা অন্য কোনো উপায়ে কোনো চ্যানেল বাংলাদেশে বিপণন, সঞ্চালন ও সম্প্রচার করতে পারিবে না”। অতএব আইন অমান্য করে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেশি বা বিদেশি টিভি চ্যানেলের ফিড বা নিজস্ব কোনো চ্যানেল সম্প্রচার বা সঞ্চালন করতে পারবে না;

৮) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ৪ (১)-এ উল্লেখ আছে, “লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হইয়া কোনো ব্যক্তি, ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারিবে না”। অতএব, লাইসেন্সধারী ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারীগণ ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিভি চ্যানেল বা অনুষ্ঠান সঞ্চালন বা সম্প্রচার করতে পারবে না;

৯) অনুমোদিত ডিস্ট্রিবিউটরগণ এই সিদ্ধান্তগুলো তাদের বিদেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারকারীদের লিখিতভাবে অবহিত করবে;

১০) আইন বা নীতিমালা বহির্ভূত, অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রচার কাজে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, সরকার অনুমোদিত দেশি ও বিদেশি টিভি চ্যানেলের ফিড কেবলমাত্র বৈধ ক্যাবল ও ডিটিএইচ অপারেটররা গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারবে। তাদের বাইরে অন্য কেউ এ কাজ করলে তা বেআইনি ও অবৈধ। এ বেআইনি কাজ বন্ধে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এই বেআইনি কাজের কারণে সরকার রাজস্ব হারায় এবং বিভিন্নভাবে বিদেশে অর্থ পাচার হয়। একই সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচারের মাধ্যমে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে যে ক্লিনফিডের ব্যবস্থা করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। দেশের জনগণের স্বার্থে এই সংক্রান্ত আইনের বাস্তবায়ন করা হবে।

অবৈধ দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেল বন্ধের কার্যক্রম শুরু

অবৈধভাবে দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেল প্রদর্শন ও লাইসেন্সবিহীন বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধে কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

সোমবার (৬ মে) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

গত ২ এপ্রিল তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সংক্রান্ত দশটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো-

১) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইন, ২০০৬ এর অধীনে অনুমোদিত সেবা প্রদানকারীগণই সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দেশি ও বিদেশি চ্যানেলগুলো গ্রাহকের কাছে বিতরণ করতে পারবে;

২) ক্লিনফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেল কিংবা অননুমোদিত কোনো চ্যানেল ডাউনলিংক, সম্প্রচার, সঞ্চালন বা বিতরণ করা যাবে না;
৩) সেট-টপ বক্স অবৈধভাবে আমদানি ও বাজারজাত করা যাবে না;

৪) টিভি চ্যানেল স্ট্রিমিং এর অ্যাপসগুলো ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে প্রচারণা করা কিংবা এ ধরনের অ্যাপস সেট-টপ-বক্স এ ইন্সটল করে বিক্রি করা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। এর বিরুদ্ধে বিটিআরসি কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;

৫) দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে, সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির স্বার্থে, বিদেশে অর্থ পাচার রোধে এবং দেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে যেকোনো অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় প্রচলিত আইন ও বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে;

৬) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ৩ (১) উল্লেখ আছে, “কোনো ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী নির্ধারিত আবেদনপত্রের ভিত্তিতে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত চ্যানেল ব্যতীত অন্য কোনো চ্যানেল বাংলাদেশে ডাউনলিংক, বিপণন, সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিতে পারিবে না”। এছাড়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় হতে বিদেশি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান ক্লিনফিড সম্প্রচারের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অতএব, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্লিনফিড ব্যতীত বিদেশি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার বা সঞ্চালন করতে পারবে না;

৭) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ৩ (২) এ উল্লেখ আছে, “কোনো ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী সরকার অনুমোদিত চ্যানেল ব্যতীত নিজস্ব কোনো অনুষ্ঠান যথা: ভিডিও, ভিসিডি, ডিভিডির মাধ্যমে অথবা অন্য কোনো উপায়ে কোনো চ্যানেল বাংলাদেশে বিপণন, সঞ্চালন ও সম্প্রচার করতে পারিবে না”। অতএব আইন অমান্য করে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেশি বা বিদেশি টিভি চ্যানেলের ফিড বা নিজস্ব কোনো চ্যানেল সম্প্রচার বা সঞ্চালন করতে পারবে না;

৮) ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ৪ (১)-এ উল্লেখ আছে, “লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হইয়া কোনো ব্যক্তি, ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারিবে না”। অতএব, লাইসেন্সধারী ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারীগণ ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিভি চ্যানেল বা অনুষ্ঠান সঞ্চালন বা সম্প্রচার করতে পারবে না;

৯) অনুমোদিত ডিস্ট্রিবিউটরগণ এই সিদ্ধান্তগুলো তাদের বিদেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারকারীদের লিখিতভাবে অবহিত করবে;

১০) আইন বা নীতিমালা বহির্ভূত, অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রচার কাজে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, সরকার অনুমোদিত দেশি ও বিদেশি টিভি চ্যানেলের ফিড কেবলমাত্র বৈধ ক্যাবল ও ডিটিএইচ অপারেটররা গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারবে। তাদের বাইরে অন্য কেউ এ কাজ করলে তা বেআইনি ও অবৈধ। এ বেআইনি কাজ বন্ধে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এই বেআইনি কাজের কারণে সরকার রাজস্ব হারায় এবং বিভিন্নভাবে বিদেশে অর্থ পাচার হয়। একই সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচারের মাধ্যমে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে যে ক্লিনফিডের ব্যবস্থা করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। দেশের জনগণের স্বার্থে এই সংক্রান্ত আইনের বাস্তবায়ন করা হবে।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছে বন্দরের প্রায় ৮টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়িতে ইমপোর্ট পারমিটের (আইপি) জন্য আবেদন করার পর তাদের এই অনুমতি দেওয়া হয়।

সোমবার (৬ মে) সকালে হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধের উপসহকারী ইউসুফ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, শনিবার (৪ মে) থেকে অনেকেই খামারবাড়িতে পেঁয়াজ আমদানি অনুমতি পত্রের জন্য আবেদন করেন। এদের মধ্য রোববার (৫ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৮টি প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছে। আরও আবেদন রয়েছে যেগুলো এখনও প্রক্রিয়াধীন।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শাহিনুর রেজা শাহিন বলেন, ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর আমরা হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। দু-এক দিনের মধ্যে পেঁয়াজ বাংলাদেশে ঢুকবে। তবে পেঁয়াজ আমদানিতে বন্দরের আমদানিকারকদের বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে।

যদি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ভারতের রপ্তানি মূল্য ও বাংলাদেশের পেঁয়াজের ওপর আরোপকৃত শুল্ক কমানো গেলে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজার স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। ভারত থেকে টন প্রতি ৫৫০ ডলারে পেঁয়াজ আমদানি করলে প্রতিকেজি পেঁয়াজের আমদানি খরচ পড়বে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।

আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো কোচ মেনোত্তি মারা গেছেন

সিজার লুইস মেনোত্তি। ছবি: সংগৃহীত

লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ১৯৭৮ সালে। স্বাগতিক হিসেবে নেদারল্যান্ডসে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম শিরোপ ঘরে তুলেছিল আলবিসেলেস্তেরা। এই শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক কোচ সিজার লুইস মেনোত্তি রোববার মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

সোমবার (৬ মে) এক বিবৃতিতে মেনত্তির মৃত্যুর খবর জানিয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)।

সিজার লুইস মেনোত্তি। ছবি: সংগৃহীত

লিওনেল মেসির জন্মশহর রোজারিওতে ১৯৩৮ সালে জন্ম মেনোত্তির। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত মাত্র ১১ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন এই স্ট্রাইকার। খেলা ছাড়ার পর ৩৭ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে ১১টি ক্লাব ও দুটি দেশের জাতীয় দলের কোচের ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন নিজের দেশ আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্বে। এ ছাড়াও এক বছর মেক্সিকোর কোচের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।

১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জেতান এই মেনোত্তি। আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানোর পরের বছর দেশের অনূর্ধ্ব-২০ দলকেও জিতিয়েছেন যুব বিশ্বকাপ। মেনোত্তির হাত ধরেই আর্জেন্টিনার খেলার ধরন বদলে যায়।

এদিকে মেনোত্তির মৃত্যুর শোক সংবাদ প্রকাশ করে ইনস্টাগ্রামে লিওনেল মেসি লিখেছেন, ‘আমাদের ফুটবলের অন্যতম গ্রেট উদাহরণ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার পরিবার এবং প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা। শান্তিতে ঘুমান।’

আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের কোচ লিওনেল স্ক্যালোনিও শোক প্রকাশ করেছেন। ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, ‘ফুটবলের একজন শিক্ষক আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। সেই সব স্নেহ সঞ্চারক কথার জন্য ধন্যবাদ, যার মাধ্যমে আপনি আমাদের মনে ছাপ রেখে গেছেন। চিরকাল হৃদয়ে থাকবেন প্রিয়।’

সর্বশেষ সংবাদ

অবৈধ দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেল বন্ধের কার্যক্রম শুরু
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি
আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো কোচ মেনোত্তি মারা গেছেন
বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পেলেন বিএনপি নেতা আমান
ফের পেছালো রিজার্ভ চুরি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া
দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় নিহত ২
সারাদেশে ঝড় ও বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ ৯ জনের মৃত্যু
হামাসের রকেট হামলায় ইসরায়েলের ৩ সেনা নিহত
অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস